আজকের দিনটি অনেক স্মরণীয়

আজকের দিনটি অনেক স্মরণীয় আমার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিটা যেমন স্মরণীয় ছিল তেমনি চাকরির পর প্রথম বেতন (২৪ হাজার টাকা)’র চেক হাতে পেলাম আজ। কুড়িটি ক্লাস, পরীক্ষা, খাতা মূল্যায়ন, ফলাফল প্রকাশ ইত্যাদির পর হাতে এসে পৌছলো চেকটা। এ এক অন্যরকম অনুভূতি।ৃ.টাকার কথা ভুলে থাকতে পারলেই আমি যেন একটু ভালো থাকি। সঙ্কোচ হয় টাকা নিয়ে কোনও কথা বলতে। তাই অন্যদের বিল হয়ে গেলেও আমি কোনও খোঁজ রাখিনি। কিন্তু সেদিন ফ্ল্যাট বুকিং দেয়ার জন্য একলাখটাকা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন হয়ে পড়ে। চেয়ারম্যান স্যার বলেন আপনার বিল তোলেন না কেন? তারপরই তড়িঘড়ি করে বিলটা তোলার ব্যবস্থা করি। কথা ছিল বিল পেলে সবাইকে একটা খাওয়া দিব। কিন্তু খাওয়া আগেই হয়ে যাওয়ায় এবং ফ্ল্যাট বুকিং এর পর টানাটানি অবস্থার কারণে দ্বিতীয়বার ঝুঁিক নিতে যাইনি। সোমবার বিলের কাগজ জমা দিতে এসে সবাইকে ফোনে ডেকেছিলাম কিন্তু বিল পাইনি, তাইবলেতো আর না খাইয়ে বিদায় করা যায় না, শেষে প্যামিলি নিডস থেকে লাঞ্চ সারলাম ৬জনের একটি টীম। মেন্যু ছিল চিকেন বিরিয়ানী। অবশ্য আজ চেয়ারম্যান স্যার এবং ডিপার্টমেন্টের পিয়নসহ তিনজনে একই হোটেলের একই মেন্যুতে লাঞ্চ সারলাম। অতএব বলা যায় আকীকা একটা হয়ে গেছে। এদিকে যাদের মিষ্টি খাওয়াতে চেয়েছিলাম তারা ফ্ল্যাটবুকিংএর পর মিষ্টি খেয়ে নিয়েছে, এখনই আবার মিষ্টি খাওয়ানো কি ঠিক হবে?

বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করাটা ছিল অনেকটা ¯^‡cœi মতো। কিন্তু জয়েনের পরপরই এমন চাপের মুখে পড়লাম! একদিকে দিগন্ত অফিস; কাটায় কাটায় ৮ঘণ্টার ডিউটি, সেটা নিশ্চিত করতে রাস্তায় আরও তিন-চারঘণ্টা। তারপর রাত বারোটার পর বাসায় ফিরে বাবুর সঙ্গে খুনসুটি... ঝামেলা ঘুমৃক্লাসের প্রস্তুতি কখন নেবো? ভাবছিলাম ছেড়ে দেবো। নিজের ওপর এতো লোড নেবো না।... কিন্তু একটা সেমিস্টার লড়াই করতে গিয়ে জড়িয়ে গেলাম ভালোলাগায়। ছাত্রছাত্রীদের মহব্বতে আর ছাড়তে পারলাম কই।

এবারের পহেলা বৈশাখটা সপরিবারে কাটলো এক ছাত্রীর বাসায়। তার বড় মেয়ে ছোট মেয়ে আর মেয়ে জামাইসহ বিরাট এক দলের সঙ্গে। সবাই কেমন কেও যেন তাকাচ্ছিল আমার দিকে। স্ট্যাম্পফোর্ডে পড়ুয়া মেয়েটি হয়ত ভাবছে আম্মুর এতো পিচ্চি স্যার? আমি যদিও অতো পিচ্চি না, আমার নিজেরওতো পিচ্চি আছে একটা দু’বছরের। সেই...কী বলবো...তাকে ছাত্রী বলতে বা ভাবতে আমারই সঙ্কোচ হচ্ছে...তার অবস্থানের কারণে। যা হোক কোনও একটা m‡¤^vab কেও নেয়া যেতো কিন্তু সে আবার কীভাবে নেবে সেটাও ভাবতে হচ্ছে... সে গাড়ি নিয়ে নিতে এসেছিল, তারপর লাঞ্চ শেষে আমাকে দিগন্তের অফিসে নামিয়ে দিয়ে আমার পরিবারকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে এসছে। পহেলা বৈশাখে যে জ্যাম ছিল রাস্তায়, অমন এসি গাড়ি না হয়ে পাবলিক গাড়ি হলে বাবুর অবস্থা যে কী হতো! ইদানীং একটা গাড়ির প্রয়োজন খুব ফিল করছি।.. .. যদি ফ্ল্যাটটার মতো কোনও সুযোগ পেয়ে যেতাম! কিস্তিতে টাকা শোধ করা যাবে এমন চান্স!

মানুষের সব আশা পূরণ হয় না। আবার হয়ওতো! কী ¯^cœ দেখতাম আমি? যখন যে ¯^cœ দেখেছি প্রায় সবটাই পূরণ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চেয়েছি পড়েছি। ফার্স্টক্লাস পেতে চেয়েছি পেয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চেয়েছি হয়েছি । সবই আল্লাহর রহমত। এমনকি অসম্ভব মনে হতো যে ফ্ল্যাট কেনাটাকে সেটাও আজ পূরণীয় তাঁর ইচ্ছায়। অতএব কেন ভাবছি গাড়ি কেনার ¯^cœUv পূরণ হবে না! এটা নিজের জন্য ¯^vš—¡bv তবে আমার ছেলের জন্যই গাড়িটা আরও বেশি ফিল করছি। ও রাস্তায় গাড়ি দেখলেই ওঠার জন্য পীড়াপীড়ি করে। তাও আবার ট্যাক্সিক্যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে সবচে বেশি যে উপকারটা হলো সেটা হচ্ছে জ্ঞানচর্চার সুযোগ এবং ক্ষেত্র আবিষ্কার। যতো যাই বলি হোক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তবু বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ই। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া।

আজ বিল পেয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধা অনেক বেড়ে গেছে আমার। অন্তত টাকা পয়সা নিয়ে ঝামেলা করেনি। এবং অ্যাটিচ্যুডও অনেক সম্মানজনক। বরং খুব মেজাজ খারাপ হলো দিগন্তেও লোকজনের ওপর। কতো সামান্য টাকায় তারা আমাদের সোনার মতো সময়গুলো কেড়ে নিচ্ছে। বঞ্চিত রাখছে সুন্দও সৃষ্টি থেকে। এমন একটা কাজ পেতাম যেখানে আমাকে রাখা হবে গবেষণার জন্য। বিভিন্ন ধরণের গবেষণা। কোম্পানীর বেনিফিট কোনপথে, গুডউইল তৈরি করা যাবে কীভাবে, স্ট্যাবলিস্ড করা যাবে কী ভাবে, অর্থাৎ শারীরিক শ্রম নয় মেধার মূল্যায়ন হবে সবার আগে... তাহলে অল্প দিনেই ভালো কিছু করতে পারতাম বলেই আমার ধারণা। আর সেসময় আমার ভেতর থেকে আরসব টেনশন সরিয়ে দিতে হবে। অর্তনৈতিক টেনশন, আবাসন টেনশন, অফিসে আসা যাওয়া নিয়ে টেনশন কিচ্ছু থাকবে না। একদম ফ্রেশ মনে কিছু চিন্তা করতে পারলে সত্যিই হয়ত দেশ ও দশের জন্য কিছু করতে পারতাম।
মাঝে মাঝে মনে হয় দেশের বাইেও চলে যাবো। অনেক টাকা নিয়ে দেশে ফিরবো। তারপর খুঁজে বের করবো দেশের সব অসহায় মানুষগগুলোকে, প্রকৃত অসহায়দের। তাদের নিয়ে গড়ে তুলবো এমন এক প্রকল্প যে রাস্তায় বেরুলে আর ক্ষুধার্ত জীর্ণ বসনা কাউকে দেখে আঁৎকে উঠতে হবে না। এটা কি আমার আবেগী উচ্চারণ? অবাস্তব? না কখনও না। আমি জানি এবং পরিকল্পনাও আছে কী করে এদেশের অধিকাংশ জনশক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত করতে হয়। এমনকি এই মুহূর্তে ১০কোটি টাকা হলেও এমন এক কাজ আমি করতে পারি... যা নজির স্থাপন করতে সক্ষম হবে। অবশ্য সফলতার নিশ্চয়তা একশভাগ দেয়া কি কোনও কিছুতে সম্ভব?. . . .

সিএনইর সাথে বেশ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে আজ। সেই থেকে আরও বেশি করে ভাবছি ছেড়ে দেবার কথা। ¯^vaxb কোনও প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব। যেখানে অজ্ঞ ও অবুঝদের কোনও স্থান হবে না। ¯^v_©ci লোভীদের স্থান হবে না।


আজ একধরণের ¯^xK…wZ পেয়ে বুকের ভেতর ¯^cœ¸‡jv আরও প্রবলতর হচ্ছে। আমি কী পারবো? কিন্তু আমাকে যে পারতেই হবে।
নিছক ফ্ল্যাট-গাড়ির ¯^cœ‡Zv ¯^cœ নয়! বড় বড় ¯^cœ¸‡jv চাপা পড়ে ক্ষীণ হয়ে আসা কিছু ছিটেফোঁটা এসব। ইচ্ছে হলেও অসম্ভব জেনে সেসবকে লুকিয়ে রাখি অযত্নে। হয়ত একদিনইবস্ফোরণ ঘটবে তাদের. . . . .

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.