বন্ধুর গল্প!
(না পড়লে ঠকবেন-চিন্তাশীলদের জন্য)
১৪ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:৩০
আমার এক বন্ধু আছে নাম ফারুক। ওর বাড়ি গোপালগঞ্জ। গোপাল গঞ্জ হলো আমার প্রাণের শহর। গোপাল গঞ্জ বিশেষভাবে পরিচিত ছিয়াত্তর কেজি (বোম) নামে। ফারুক কাউকে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বেশ আনন্দের সাথে বলে, আরে চিনলেন না? ছিয়াত্তর কেজি!-ছিয়াত্তর কেজি? বুঝলাম না!-আরে বোমা বৃহৎ বোমা ফাটার ঘটনা মনে নাই....ছোট্ট একটি শহরকে জঙ্গীরা সারাদেশে পরিচিত করে দিল, এতে ফারুকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ....কিন্তু সেই সঙ্গে ওর নতুন আরেকটি স্বভাব যুক্ত হয়েছে। এখন যেখানে যা কিছূ হোক ও একবাক্যে বলে দেয় এটা জঙ্গীদের কাজ। এমনকি সেদিন ওদের পেঁপে বাগানের সাতটি পেঁপে গাছ উপড়ে ফেলা দেখেও ওর একই সন্দেহ! নিশ্চই জঙ্গীরা করেছে। তাই বলে ভেতরে ভেতরে ওর কোনও ভয় লুকিয়ে আছে বলেও মনে হলো না। সেদিন সেই ঘটনায় আটক পরে ছাড়া পেয়েছে একলাখটাকা উকিলি চুক্তির মাধ্যমে, সেই লোকের (হুজুরের) মেয়ের বিয়েতে গিয়েছিল ফারুক ওর বন্ধুদের সাথে। এতো লোকসমাগম! অবাক হবার মতো। ফারুকই আমাকে পরে বলেছে... মেয়েটাও নাকি অসম্ভব সুন্দরী হুর-পরী। তারচেও স্পেশাল খবর হলো মেয়েটার একটা ভাই আছে হ্যাভি সুন্দর!....তো দেশে বিদেশে যেখানে যে ঘটনাই ঘটুক ফারুক একটা কানেকশন ঠিকই খুঁজে বের করে। ওর তো আর কোনও প্রমাণ লাগে না। জঙ্গীরা ওর বাগানে এসেছিল! এটাকি কম কথা? যাদের জন্য পুরো দেশ পেরেশান! তার একজন এসেছিল ওর বাড়ির কাছে...আমার এক আপু আছে ওর মতো চাপাবাজ, মিথ্যুক আর কাহিনীবাজ। আমাদের কাছে, বন্ধুমহলে এ জন্য ওর বেশ সুনাম ও আছে। সবাই ওসব গালগপ্পে ভালোই মজা পায়। তো সেই আপুর নাম হলো হাসি আপু। হাসি আপু হাসেনও একেবারে শিশুদের মতো, ভারি শরীর দুলিয়ে। যেন ক্লাস ফাইভে পড়ুয়া অধিকযত্নে মুটিয়ে যাওয়া কোনও স্কুলবালিকা। সেই আপুর অবস্থাও ডেন্জারাস! সন্ত্রাসী বিকাশকে তিনলাখটাকার চুক্তিতে আইনী সহযোগিতা দেয় তার বাবা অ্যাডভোকেট তারেক আঙ্কেল। বিকাশকে ছাড়ানোর পর আঙ্কেল আর ঠিকমত ঘুমাতে পারেন না। কখন যে বিকাশ চলে আসে সেই টাকা নিতে! অনেক সময় ডিলটা বাসাতেই হয়েছে, ওর স্বজনরা এবং বিকাশ নিজেও বাসাটা চেনে...তার বাবা থাকেন ভয়ে আর হাসি আপু গলা উঁচিয়ে বলে বেড়ান বিকাশ প্রায়ই তাদের বাসায় আসে। তার হাতে চা খায়, খুব লাজুক টাইপের, মুখ তুলে চায় না.. এমন নানান কেচ্ছা। এমনকি রেবের হাতে ক্রসফায়ার হওয়ার পরও আপু এই কেসসা চালু রাখেন। আমরা হাসি...ফারুক ছোটবেলা থেকেই একটু বেশি লম্বা। আমরা ওকে লম্বুও বলতাম। লম্বু এখনও বলে সেনাবাহিনী হত্যাকাণ্ডে জঙ্গী জড়িত!...আমরা হাসি আর ভাবি কোথায় মানুষ ভাবছে বিদেশী শক্তির তৎপরতা... আর লম্বু ভাবে....ও এখন ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যপক ব্যস্ত। ইদানীং আর তেমন কথা হয় না। সেলফোনটাও ধরে ওর দোকানের ম্যানেজার। অনেক রিকোয়েস্ট করে, গুরুত্ব বুঝিয়ে তারপর পেতে হয়। সেদিন নিজে ফোন করে তিনবার। আমিতো অবাক! লম্বু তোর ফোনেও প্রবলেম? বাণিজ্য কমিয়ে নিজের জন্য একটু খরচ কর। একটা ভালো মোবাইল নে। শুনলাম তুই নাকি ক্লায়েন্টদের নাম্বার বিলিয়ে বেড়াস?-হ রে কিন্তু ফোনতো আসে না। ফোন আসে না নাকি ওই ব্যাটা চামচাই দেয় না বুঝি না। ব্যাটার অনেক জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব। সবাইরে শালা ফালতু মনে করে। পুলিশ যেমন সবাইরে চোর মনে করে... আরে সেদিন একটা বড় পার্টির ডিল ছিল... ওইব্যাটা স্যার ব্যস্ত বলে ফোন কেটে দেয়! তারপর প্রায় তারই পায়ে ধরার অবস্থা আমার।-হু বুঝলাম, তা কামাইতেছতো ভালোই? আমগো কথা মনে পড়ে, -আরে কামাই এখনও শুরু হয় নাই কেবল জাল বিছাইতেছি, তবে খবরতো শুনছো.. না বাহিনী আউট! শালারা একচেটিয়া অমুকের পক্ষে টানে। দিছে একেবারে...-কিন্তু দিল কারা? কিছু বুঝছ?আর বোঝাবুঝি! নির্ঘাৎ জঙ্গীরা! ওদের ৬টারে দিছিল যে।- আরে কাহিনী রাখো। তাইলেতো এক সুলজারকে মারলেই হতো... এতো গুলানরে...আমি মিছা কথা কই না। না জেনেও কিছু বলি না। আমার কথা যদি ভুল প্রমাণিত হয় আমার চুল কাইট্টা আলকাতরা লাগাইস।-ধুর! আলকাতরাতো নৌকায় লাগাতে হয়, আর তোর যে কয়টা চুল, জিদ কমবে না। অন্য কিছু বল।- তাইলে ধর আমার জিহ্বা কেটে ফেলবো।চলবে?-আচ্ছা সই! তোর জিহ্বা কাটবো। আর কতোদিন মিথ্যা চালবাগি করবি বল!...আহারে! যদি লম্বুর কথা ভূয়া প্রমাণিত হয়? ওর এতোকালের মিথ্যাচাপাবাজির জিহ্বাটা হারাতে হবে! ও অবশ্য মানবাধিকা রক্ষার নামে পার পেয়েও যেতে পারে! তবু আরেকবার মানুষের কাছে বন্ধুদের কাছে ও লজ্জিত হবে। হাসি আপুকে ঘটনাটা বলায় সে যা উত্তর করলো আমিতো থ... সেটা আরেক এপিসোড! জানতে হলে চোখ রাখুন....
১৪ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:৩০
আমার এক বন্ধু আছে নাম ফারুক। ওর বাড়ি গোপালগঞ্জ। গোপাল গঞ্জ হলো আমার প্রাণের শহর। গোপাল গঞ্জ বিশেষভাবে পরিচিত ছিয়াত্তর কেজি (বোম) নামে। ফারুক কাউকে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বেশ আনন্দের সাথে বলে, আরে চিনলেন না? ছিয়াত্তর কেজি!-ছিয়াত্তর কেজি? বুঝলাম না!-আরে বোমা বৃহৎ বোমা ফাটার ঘটনা মনে নাই....ছোট্ট একটি শহরকে জঙ্গীরা সারাদেশে পরিচিত করে দিল, এতে ফারুকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ....কিন্তু সেই সঙ্গে ওর নতুন আরেকটি স্বভাব যুক্ত হয়েছে। এখন যেখানে যা কিছূ হোক ও একবাক্যে বলে দেয় এটা জঙ্গীদের কাজ। এমনকি সেদিন ওদের পেঁপে বাগানের সাতটি পেঁপে গাছ উপড়ে ফেলা দেখেও ওর একই সন্দেহ! নিশ্চই জঙ্গীরা করেছে। তাই বলে ভেতরে ভেতরে ওর কোনও ভয় লুকিয়ে আছে বলেও মনে হলো না। সেদিন সেই ঘটনায় আটক পরে ছাড়া পেয়েছে একলাখটাকা উকিলি চুক্তির মাধ্যমে, সেই লোকের (হুজুরের) মেয়ের বিয়েতে গিয়েছিল ফারুক ওর বন্ধুদের সাথে। এতো লোকসমাগম! অবাক হবার মতো। ফারুকই আমাকে পরে বলেছে... মেয়েটাও নাকি অসম্ভব সুন্দরী হুর-পরী। তারচেও স্পেশাল খবর হলো মেয়েটার একটা ভাই আছে হ্যাভি সুন্দর!....তো দেশে বিদেশে যেখানে যে ঘটনাই ঘটুক ফারুক একটা কানেকশন ঠিকই খুঁজে বের করে। ওর তো আর কোনও প্রমাণ লাগে না। জঙ্গীরা ওর বাগানে এসেছিল! এটাকি কম কথা? যাদের জন্য পুরো দেশ পেরেশান! তার একজন এসেছিল ওর বাড়ির কাছে...আমার এক আপু আছে ওর মতো চাপাবাজ, মিথ্যুক আর কাহিনীবাজ। আমাদের কাছে, বন্ধুমহলে এ জন্য ওর বেশ সুনাম ও আছে। সবাই ওসব গালগপ্পে ভালোই মজা পায়। তো সেই আপুর নাম হলো হাসি আপু। হাসি আপু হাসেনও একেবারে শিশুদের মতো, ভারি শরীর দুলিয়ে। যেন ক্লাস ফাইভে পড়ুয়া অধিকযত্নে মুটিয়ে যাওয়া কোনও স্কুলবালিকা। সেই আপুর অবস্থাও ডেন্জারাস! সন্ত্রাসী বিকাশকে তিনলাখটাকার চুক্তিতে আইনী সহযোগিতা দেয় তার বাবা অ্যাডভোকেট তারেক আঙ্কেল। বিকাশকে ছাড়ানোর পর আঙ্কেল আর ঠিকমত ঘুমাতে পারেন না। কখন যে বিকাশ চলে আসে সেই টাকা নিতে! অনেক সময় ডিলটা বাসাতেই হয়েছে, ওর স্বজনরা এবং বিকাশ নিজেও বাসাটা চেনে...তার বাবা থাকেন ভয়ে আর হাসি আপু গলা উঁচিয়ে বলে বেড়ান বিকাশ প্রায়ই তাদের বাসায় আসে। তার হাতে চা খায়, খুব লাজুক টাইপের, মুখ তুলে চায় না.. এমন নানান কেচ্ছা। এমনকি রেবের হাতে ক্রসফায়ার হওয়ার পরও আপু এই কেসসা চালু রাখেন। আমরা হাসি...ফারুক ছোটবেলা থেকেই একটু বেশি লম্বা। আমরা ওকে লম্বুও বলতাম। লম্বু এখনও বলে সেনাবাহিনী হত্যাকাণ্ডে জঙ্গী জড়িত!...আমরা হাসি আর ভাবি কোথায় মানুষ ভাবছে বিদেশী শক্তির তৎপরতা... আর লম্বু ভাবে....ও এখন ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যপক ব্যস্ত। ইদানীং আর তেমন কথা হয় না। সেলফোনটাও ধরে ওর দোকানের ম্যানেজার। অনেক রিকোয়েস্ট করে, গুরুত্ব বুঝিয়ে তারপর পেতে হয়। সেদিন নিজে ফোন করে তিনবার। আমিতো অবাক! লম্বু তোর ফোনেও প্রবলেম? বাণিজ্য কমিয়ে নিজের জন্য একটু খরচ কর। একটা ভালো মোবাইল নে। শুনলাম তুই নাকি ক্লায়েন্টদের নাম্বার বিলিয়ে বেড়াস?-হ রে কিন্তু ফোনতো আসে না। ফোন আসে না নাকি ওই ব্যাটা চামচাই দেয় না বুঝি না। ব্যাটার অনেক জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব। সবাইরে শালা ফালতু মনে করে। পুলিশ যেমন সবাইরে চোর মনে করে... আরে সেদিন একটা বড় পার্টির ডিল ছিল... ওইব্যাটা স্যার ব্যস্ত বলে ফোন কেটে দেয়! তারপর প্রায় তারই পায়ে ধরার অবস্থা আমার।-হু বুঝলাম, তা কামাইতেছতো ভালোই? আমগো কথা মনে পড়ে, -আরে কামাই এখনও শুরু হয় নাই কেবল জাল বিছাইতেছি, তবে খবরতো শুনছো.. না বাহিনী আউট! শালারা একচেটিয়া অমুকের পক্ষে টানে। দিছে একেবারে...-কিন্তু দিল কারা? কিছু বুঝছ?আর বোঝাবুঝি! নির্ঘাৎ জঙ্গীরা! ওদের ৬টারে দিছিল যে।- আরে কাহিনী রাখো। তাইলেতো এক সুলজারকে মারলেই হতো... এতো গুলানরে...আমি মিছা কথা কই না। না জেনেও কিছু বলি না। আমার কথা যদি ভুল প্রমাণিত হয় আমার চুল কাইট্টা আলকাতরা লাগাইস।-ধুর! আলকাতরাতো নৌকায় লাগাতে হয়, আর তোর যে কয়টা চুল, জিদ কমবে না। অন্য কিছু বল।- তাইলে ধর আমার জিহ্বা কেটে ফেলবো।চলবে?-আচ্ছা সই! তোর জিহ্বা কাটবো। আর কতোদিন মিথ্যা চালবাগি করবি বল!...আহারে! যদি লম্বুর কথা ভূয়া প্রমাণিত হয়? ওর এতোকালের মিথ্যাচাপাবাজির জিহ্বাটা হারাতে হবে! ও অবশ্য মানবাধিকা রক্ষার নামে পার পেয়েও যেতে পারে! তবু আরেকবার মানুষের কাছে বন্ধুদের কাছে ও লজ্জিত হবে। হাসি আপুকে ঘটনাটা বলায় সে যা উত্তর করলো আমিতো থ... সেটা আরেক এপিসোড! জানতে হলে চোখ রাখুন....
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন