আমি ও সে
আমি ও সে
১৪ ই এপ্রিল, ২০০৮ রাত ১০:১৫
-হ্যালো!-হ্যা বলো-নেট নিয়ে ব্যস্ত?-না ঠিক আছে-তুমিকি আমার কথা শুনতে পাচ্ছ?সা-পাচ্ছি, হাত মুখ কান একসঙ্গে চলমান-নেটটা একটু রাখবা? -আচ্ছা রাখছি -হ্যা, এবার বলো, -তুমি এমন হয়ে গেছো কেন? আমার সাথে কথা বলতে তোমার ভালো লাগে না? -লাগেতো! সময় পাই না। -কী এতো কাজ তোমার? সারাদিন? -জানি না।-প্লিজ এমন করে না, পাখি। আমার খুব কষ্ট হয়।-খিদে পাইছে, খেতে দিবে?-আসো,-কী খাওয়াবো?সব, যা চাইবে তুমিসা-আমি কী চাইবো?তাতো জানি না!-কেন জানো না? তার মানে আমাকেও তুমি ভুলে গেছো?না, তা কখনই না।একটু অন্যভাবে বলো-কীভাবে?আরও আন্তরিকতার সাথে বলো-নাগো সোনা আমি তোমাকে সহজে ভুলে যাবো না। তার মানে? ভুলে যাবে?-উফ! বললামতো ভুলবো না!বিরক্ত হচ্ছ? রেখে দেবো?তুমি আর আগের মতো হবে না?-হবো। সময় পেলেই হবো।আমাদের বাড়িতে আসবে?-আসবো, নেবার মতো নিলেই তবে আসবো।সম্মান চাও?-সেটাকি চাওয়া অন্যায়?না, তা হবে কেন? তবে যে জিনিস চাইলে আরও হারাতে হয় তা কেন চাইলে?-হারানোর জন্যই চাইলাম! যা পাবো না, তা না হয় নিজের হাতেই হারালাম! তবু ট্রাজেডির কারুণ্য-আনন্দ পেতে পারবো। আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান।আমার প্রতি কি তোমার কোনও ফিলিংস নাই?-আছে, কিন্তু দেখাতে পারি না।কেন পারো না?আগেতো খুব পারতে!-হয়ত এখনও পারি, হয়ত তুমিই বুঝতে পার না।একটু ঠিকমত কথা বলবে?-বলছিতো!না এভাবে না। আগের মতো করে।-বলো, কীভাবে বললে খুশি হও?না আমি বলবো সেভাবে বলবে এত অর্ডারি হয়ে গেলো। যদি পারো নিজ থেকে একটু সুন্দরকরে কথা বলো।-এখন আসছে না। পরে..তুমিকি অন্যকারও প্রেমে পড়েছ?-এই তোমাদের এক সন্দেহ, এটা পরিহার করো, না হয় সবই হারাবে।থাক আর থ্রেট দিও না। রাখি!ছেলেটাকে নিয়ে বড্ড যন্ত্রণায় আছি। কোনও কাজই করা যায় না। কবে কখন কীভাবে ভালোবেসেছিলাম এখনও তার দায় বইতে হবে। যখন তখন ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করে। তাও আবার ফোন না, মিসকল। প্রথম প্রথম এটাই ভালো লাগতো। ভাবতাম ছেলেটা একটু ভিন্ন টাইপের। মেয়েদের পেছনে খরচকরার মতো বদ স্বভাবের না। কিন্তু এখন দেখছি একটা আস্ত ছোটলোক। ফোনতো করেই না। মিসকল দিলে ব্যাক না করলে যত্তোসব বচন। ভুলে গেছো হেন তেন এসব। মানুষেরকি সবসময় একইরকম যায়? একসময় ভালোলাগতো বলে সবসময় ভালো লাগবে এমন কোনও কথা আছে?অবশ্য সে সময়টাও যা ছিল! আমি প্রায় নিঃস্বঙ্গ হয়ে গিয়েছিলাম। একটা পুরনো বন্ধু হঠাৎ আমাদের বিদায় জানিয়ে চলে গেলো, সামান্য জ্বরের উসিলায়। অবশ্য পরে জেনেছি হেপাটাইটিস বি।তো তারপর থেকে সারাক্ষণ একা থাকতাম। অন্ধকার ভালো লাগতো। কারও সাথে কথা বলতে ভালো লাগতো না। কেউ বাসায় এলে ক্ষেপে যেতাম। সময় দিতাম না। মনে হতো আমারও একই অসুখ। আমিও কিছুদিন পর মারা যাবো।...সেই সময় ঝড়ের মতো এই পাগলের আবির্ভাব। এবং এরকমই এক বৈশাখে।বারবার মিসকল দেখে ভীষণ বিরক্ত হয়ে ফোন ব্যাক দিলাম।হ্যালো! কে?তুমি কেআমি তোর মা, কাকে ফোন করছিস জানিস না?স্যরি মা ভুল হয়ে গেছে! আপনার পায়ে পড়ি..যত্তোসব! বলে ফোন কেটে দিলাম।একটুপর আবার মিসকল।আবার ব্যক দিলাম-এই কুত্তারবাচ্চা। তোরকি লাজলজ্জা বলতে কিছু নাই? আর মিসকল দিবিতো খবর আছে।কী করবেন?তুই কী চাস বলতো?মাগো তোমার আদর চাই। বিশ্বাস করো মা আমি জীবনে মায়ের আদর কেমন দেখিনি..সেই ছোট্টবেলায়.. বলে সেকি কান্না। একদম অরিজিনাল।আমার একটু ভাবোদয় হলো। চোখের পানির এই এক ক্ষমতা। মানুষ অন্যকে আবেগপ্রবণ হতে দেখলে নিজের আবেগকে আর ধরে রাখতে পারে না।..বললাম- আচ্ছা ঠিক আছে। বলেনতো আসলে আপনি কে?ও ওর সব পরিচয় বলল; গড়গড় করে। পরিচয় শুনে আমার মনে হলো বুয়েটে পড়া একটা ছেলে খারাপ হতে পারে না। হয়ত একটু পাগলাটে টাইপের। মায়ের যত্ন না পেলে যা হয়।আমি বললাম-ঠিক আছে, আপনার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হতে পারে তবে অনেস্ট হতে হবে।আম্মা আমি আপনাকে আম্মাই ডাকবো। আর মায়ের সাথে কেউ উল্টাপাল্টা করে? চুপ!হারামি। কুমারী মা বানিয়ে লোক হাসাতে চাস?তাহলে?তাহলে আবার কি?আমার নাম ধরে ডাকবেননা আমি পারব না।না পারলে না, আমি কেন ধাড়ি ছেলের মা হতে যাবো?....এরপর থেকে ও ফোন দিত । আমাকে রিচার্জ পাঠাতো। আমিও শেয়ার করতাম। পহেলা বৈশাখ তখন দোরগোড়ায়। ও আমাকে শাড়ি কিনে দিতে চায়, আমি রাজি না। আমি শুধু ওকে একবার দেখতে চাই। ও আসে। শাড়ি নিয়েই আসে। এবং মা বলে সালাম করে। সবার সামনেও মা বলে। যেন আমার কচি খোকা।কিছুদিন ভালোও লাগল। ছেলেটা সুন্দর। চেহারায় মায়ামায়া একটা ভাব আছে। এদিকে আদর পেয়ে যেন গোল্লায় যাচ্ছে, আমাদের বাসা থেকে যাওয়ার নাম নাই। বললাম তোর ভার্সিটি কয়দিন বন্ধ? যাবি না?আমাকে তাড়াতে চাও মা, আমাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবে?এদিকে মাও একটু খিটমিটে ব্যবহার করছে, এতো বড় নাতিতে সে সুখী না। মায়েরা হয়ত মেয়েদের বিয়ের ভাবনাটাই সবচে বেশি ভাবে। ছেলেটা যদি আমার অ্যাফেয়ার হতো তাহলেও হয়ত মা এতোটা ক্ষেপে যেতো না। বরং...সেদিন বললও মা।ধ্যাত এসবকি? এতোবড় একটা ছেলে, সারাদির ঘরেবাইরে তোর পিছেপিছে ম্যা ম্যা করে ঘুরে বেড়ায়, অন্য কোনও মতলবটতলব নেইতো?জানি? থাকতেও পারে।আশপাশের মানুষও কিন্তু দুয়েক কথা বলছে। বলছে মেয়ের সঙ্গে কীসের সম্পর্ক?বাইরের লোকের কথায় কান দিও না। যা বলে বলুক। ও তেমন ছেলে না।না তা না হোক, তবে..তবে কি মা? ওকে তাড়াতে হবে এইতো? সেটা আমি কালই করছি।এবং সত্যিসত্যি দেখলাম সকালে ওর ব্যাগ রেডি। বললাম পালাচ্ছো কোথায়?পালাচ্ছি না, আবার আসবো। স্যার ফোন করেছিলেন। আমার অ্যাসাইনমেন্ট নাকি এখনও জমা পাননি। স্যারের পিওনের হাতে দিয়ে এসছিলাম!... আর পরীক্ষার প্ল্যানও নাকি দিয়ে দিবে শিঘ্রই!রাস্তা পর্যন্ত গেলাম ওকে এগিয়ে দেবার জন্য।বিদায়ের সময় মা ওকে বলল- আবার এসো বাবা, তোমার কোনও যত্ন নিতে পারি নাই। আর তোমার বাবা-মাকেও নিয়ে এসো।...মায়ের কথায় ও কী মনে করলো জানি না, তবে আমার খটকা লাগল। মা কেন ওকে বাবা বলল? তার মানে মা কোনওভাবেই মানতে চায় না?রাস্তায় গিয়ে দেখি গাড়ি এসছে ওকে নিতে। তার মানে?এই ছেলে সাধারণ কেউ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি যাকে নিতে আসে, সে আর যাইহোক গুরুত্বহীন পাগল নয়।...তারপর কেমনকরে যেন সম্পর্কটায় একটু প্যাচ লাগলো। আমারও আর ভালো লাগে না মা ডাক শুনতে। ওকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করলাম মা বলবে না। ও বললো তাহলে কী বলবো? কোনও কিচুতেই ও রাজি না। হাজার হোক মা যাকে একবার ডেকেছে...আমি ওকে অনেক উদাহরণ দিলাম, খালাতবোনের মেয়েকে বিয়ে করার উদাহরণ, দুরতম ফুফুকে বিয়ে উদাহরণ। আমাদের বাড়ির পাশের আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক নাইম, সেও তার সম্পর্কে ফুফু, তাকে বিয়ে করেছে। আর মানুষ তোমার আমার সম্পর্ক নিয়ে কেন অন্যকিছু ভাববে না? একটা ছড়াও বললাম* ওগো প্রিয়তমা, লোকসমক্ষে ডেকো মামা*এবং নির্লজ্জভাবে যেটা বললাম সেটা হলো, আইলাভইউ। এবং চুমুও খেলাম ফোনে। তারপর একদিন এইতো গত১৪ ফেব্রুয়ারিতে সারাদিন একত্রে কাটালাম, দুজন দুজনকে অনেক চুমু খেলাম। ও ও এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, যেন আমাকে চুমু খাওয়ার জন্যই ওর জন্ম।এদিকে একটা ফার্মে আমি জয়েন করি। কদিন হলো! অথচ মনে হয় যেন যুগযুগ ধরে আমি চাকরিই করছি। আর এই চাকরিতে ঢোকার পরই আমার সবকিছু পাল্টে যেতে লাগল। দুনিয়াকে দেখছি সম্পূর্ণ আলাদাভাবে। ওর কোনও কিছুই আর আমাকে কৌতূহলি করে না, আকৃষ্টও করে না। আমি ওকে এখন এড়াতে চাই। কিন্তু ও চায় আমাকে গিলে খেতে। ফোনে কোটিকোটি চুমু... আরও অনেক অ্যাডাল্টনেস। আমি বোরিং ফিল করি। মা আমার জন্য ছেলে ঠিক করেছে। আর ওকেতো অন্যভাবে নেওয়া নাকি সম্ভব নয়। কারণ আশপাশের মানুষ তাতে প্রশ্ন তুলবে।...তাহলে এখন উপায়?আমার ধারণা ও এখন আমাকে একান্তভাবেই চায়। এবং সেটা...কিন্তু আমিকি নিজেকে নিঃশেষ করে দেবো? সবাইকে ছেড়ে একা থাকতেকি পারবো? পারবো না।এ কেমন সম্পর্ক হয় মানুষের?ছিঃছিঃমাঝেমাঝে ইচ্ছেকরে বিষ খেতে। আবার ভাবি দেখি না আরেকটু। যদি বেঁচে থাকা যায়।জানি না, কোন ইচ্ছাটার বিজয় হয়...শুধু জানি আমি অন্যায় করেছি, অন্যায় করছি, পাপ আমাকে ছাড়বে না। অতএব...
১৪ ই এপ্রিল, ২০০৮ রাত ১০:১৫
-হ্যালো!-হ্যা বলো-নেট নিয়ে ব্যস্ত?-না ঠিক আছে-তুমিকি আমার কথা শুনতে পাচ্ছ?সা-পাচ্ছি, হাত মুখ কান একসঙ্গে চলমান-নেটটা একটু রাখবা? -আচ্ছা রাখছি -হ্যা, এবার বলো, -তুমি এমন হয়ে গেছো কেন? আমার সাথে কথা বলতে তোমার ভালো লাগে না? -লাগেতো! সময় পাই না। -কী এতো কাজ তোমার? সারাদিন? -জানি না।-প্লিজ এমন করে না, পাখি। আমার খুব কষ্ট হয়।-খিদে পাইছে, খেতে দিবে?-আসো,-কী খাওয়াবো?সব, যা চাইবে তুমিসা-আমি কী চাইবো?তাতো জানি না!-কেন জানো না? তার মানে আমাকেও তুমি ভুলে গেছো?না, তা কখনই না।একটু অন্যভাবে বলো-কীভাবে?আরও আন্তরিকতার সাথে বলো-নাগো সোনা আমি তোমাকে সহজে ভুলে যাবো না। তার মানে? ভুলে যাবে?-উফ! বললামতো ভুলবো না!বিরক্ত হচ্ছ? রেখে দেবো?তুমি আর আগের মতো হবে না?-হবো। সময় পেলেই হবো।আমাদের বাড়িতে আসবে?-আসবো, নেবার মতো নিলেই তবে আসবো।সম্মান চাও?-সেটাকি চাওয়া অন্যায়?না, তা হবে কেন? তবে যে জিনিস চাইলে আরও হারাতে হয় তা কেন চাইলে?-হারানোর জন্যই চাইলাম! যা পাবো না, তা না হয় নিজের হাতেই হারালাম! তবু ট্রাজেডির কারুণ্য-আনন্দ পেতে পারবো। আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান।আমার প্রতি কি তোমার কোনও ফিলিংস নাই?-আছে, কিন্তু দেখাতে পারি না।কেন পারো না?আগেতো খুব পারতে!-হয়ত এখনও পারি, হয়ত তুমিই বুঝতে পার না।একটু ঠিকমত কথা বলবে?-বলছিতো!না এভাবে না। আগের মতো করে।-বলো, কীভাবে বললে খুশি হও?না আমি বলবো সেভাবে বলবে এত অর্ডারি হয়ে গেলো। যদি পারো নিজ থেকে একটু সুন্দরকরে কথা বলো।-এখন আসছে না। পরে..তুমিকি অন্যকারও প্রেমে পড়েছ?-এই তোমাদের এক সন্দেহ, এটা পরিহার করো, না হয় সবই হারাবে।থাক আর থ্রেট দিও না। রাখি!ছেলেটাকে নিয়ে বড্ড যন্ত্রণায় আছি। কোনও কাজই করা যায় না। কবে কখন কীভাবে ভালোবেসেছিলাম এখনও তার দায় বইতে হবে। যখন তখন ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করে। তাও আবার ফোন না, মিসকল। প্রথম প্রথম এটাই ভালো লাগতো। ভাবতাম ছেলেটা একটু ভিন্ন টাইপের। মেয়েদের পেছনে খরচকরার মতো বদ স্বভাবের না। কিন্তু এখন দেখছি একটা আস্ত ছোটলোক। ফোনতো করেই না। মিসকল দিলে ব্যাক না করলে যত্তোসব বচন। ভুলে গেছো হেন তেন এসব। মানুষেরকি সবসময় একইরকম যায়? একসময় ভালোলাগতো বলে সবসময় ভালো লাগবে এমন কোনও কথা আছে?অবশ্য সে সময়টাও যা ছিল! আমি প্রায় নিঃস্বঙ্গ হয়ে গিয়েছিলাম। একটা পুরনো বন্ধু হঠাৎ আমাদের বিদায় জানিয়ে চলে গেলো, সামান্য জ্বরের উসিলায়। অবশ্য পরে জেনেছি হেপাটাইটিস বি।তো তারপর থেকে সারাক্ষণ একা থাকতাম। অন্ধকার ভালো লাগতো। কারও সাথে কথা বলতে ভালো লাগতো না। কেউ বাসায় এলে ক্ষেপে যেতাম। সময় দিতাম না। মনে হতো আমারও একই অসুখ। আমিও কিছুদিন পর মারা যাবো।...সেই সময় ঝড়ের মতো এই পাগলের আবির্ভাব। এবং এরকমই এক বৈশাখে।বারবার মিসকল দেখে ভীষণ বিরক্ত হয়ে ফোন ব্যাক দিলাম।হ্যালো! কে?তুমি কেআমি তোর মা, কাকে ফোন করছিস জানিস না?স্যরি মা ভুল হয়ে গেছে! আপনার পায়ে পড়ি..যত্তোসব! বলে ফোন কেটে দিলাম।একটুপর আবার মিসকল।আবার ব্যক দিলাম-এই কুত্তারবাচ্চা। তোরকি লাজলজ্জা বলতে কিছু নাই? আর মিসকল দিবিতো খবর আছে।কী করবেন?তুই কী চাস বলতো?মাগো তোমার আদর চাই। বিশ্বাস করো মা আমি জীবনে মায়ের আদর কেমন দেখিনি..সেই ছোট্টবেলায়.. বলে সেকি কান্না। একদম অরিজিনাল।আমার একটু ভাবোদয় হলো। চোখের পানির এই এক ক্ষমতা। মানুষ অন্যকে আবেগপ্রবণ হতে দেখলে নিজের আবেগকে আর ধরে রাখতে পারে না।..বললাম- আচ্ছা ঠিক আছে। বলেনতো আসলে আপনি কে?ও ওর সব পরিচয় বলল; গড়গড় করে। পরিচয় শুনে আমার মনে হলো বুয়েটে পড়া একটা ছেলে খারাপ হতে পারে না। হয়ত একটু পাগলাটে টাইপের। মায়ের যত্ন না পেলে যা হয়।আমি বললাম-ঠিক আছে, আপনার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হতে পারে তবে অনেস্ট হতে হবে।আম্মা আমি আপনাকে আম্মাই ডাকবো। আর মায়ের সাথে কেউ উল্টাপাল্টা করে? চুপ!হারামি। কুমারী মা বানিয়ে লোক হাসাতে চাস?তাহলে?তাহলে আবার কি?আমার নাম ধরে ডাকবেননা আমি পারব না।না পারলে না, আমি কেন ধাড়ি ছেলের মা হতে যাবো?....এরপর থেকে ও ফোন দিত । আমাকে রিচার্জ পাঠাতো। আমিও শেয়ার করতাম। পহেলা বৈশাখ তখন দোরগোড়ায়। ও আমাকে শাড়ি কিনে দিতে চায়, আমি রাজি না। আমি শুধু ওকে একবার দেখতে চাই। ও আসে। শাড়ি নিয়েই আসে। এবং মা বলে সালাম করে। সবার সামনেও মা বলে। যেন আমার কচি খোকা।কিছুদিন ভালোও লাগল। ছেলেটা সুন্দর। চেহারায় মায়ামায়া একটা ভাব আছে। এদিকে আদর পেয়ে যেন গোল্লায় যাচ্ছে, আমাদের বাসা থেকে যাওয়ার নাম নাই। বললাম তোর ভার্সিটি কয়দিন বন্ধ? যাবি না?আমাকে তাড়াতে চাও মা, আমাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবে?এদিকে মাও একটু খিটমিটে ব্যবহার করছে, এতো বড় নাতিতে সে সুখী না। মায়েরা হয়ত মেয়েদের বিয়ের ভাবনাটাই সবচে বেশি ভাবে। ছেলেটা যদি আমার অ্যাফেয়ার হতো তাহলেও হয়ত মা এতোটা ক্ষেপে যেতো না। বরং...সেদিন বললও মা।ধ্যাত এসবকি? এতোবড় একটা ছেলে, সারাদির ঘরেবাইরে তোর পিছেপিছে ম্যা ম্যা করে ঘুরে বেড়ায়, অন্য কোনও মতলবটতলব নেইতো?জানি? থাকতেও পারে।আশপাশের মানুষও কিন্তু দুয়েক কথা বলছে। বলছে মেয়ের সঙ্গে কীসের সম্পর্ক?বাইরের লোকের কথায় কান দিও না। যা বলে বলুক। ও তেমন ছেলে না।না তা না হোক, তবে..তবে কি মা? ওকে তাড়াতে হবে এইতো? সেটা আমি কালই করছি।এবং সত্যিসত্যি দেখলাম সকালে ওর ব্যাগ রেডি। বললাম পালাচ্ছো কোথায়?পালাচ্ছি না, আবার আসবো। স্যার ফোন করেছিলেন। আমার অ্যাসাইনমেন্ট নাকি এখনও জমা পাননি। স্যারের পিওনের হাতে দিয়ে এসছিলাম!... আর পরীক্ষার প্ল্যানও নাকি দিয়ে দিবে শিঘ্রই!রাস্তা পর্যন্ত গেলাম ওকে এগিয়ে দেবার জন্য।বিদায়ের সময় মা ওকে বলল- আবার এসো বাবা, তোমার কোনও যত্ন নিতে পারি নাই। আর তোমার বাবা-মাকেও নিয়ে এসো।...মায়ের কথায় ও কী মনে করলো জানি না, তবে আমার খটকা লাগল। মা কেন ওকে বাবা বলল? তার মানে মা কোনওভাবেই মানতে চায় না?রাস্তায় গিয়ে দেখি গাড়ি এসছে ওকে নিতে। তার মানে?এই ছেলে সাধারণ কেউ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি যাকে নিতে আসে, সে আর যাইহোক গুরুত্বহীন পাগল নয়।...তারপর কেমনকরে যেন সম্পর্কটায় একটু প্যাচ লাগলো। আমারও আর ভালো লাগে না মা ডাক শুনতে। ওকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করলাম মা বলবে না। ও বললো তাহলে কী বলবো? কোনও কিচুতেই ও রাজি না। হাজার হোক মা যাকে একবার ডেকেছে...আমি ওকে অনেক উদাহরণ দিলাম, খালাতবোনের মেয়েকে বিয়ে করার উদাহরণ, দুরতম ফুফুকে বিয়ে উদাহরণ। আমাদের বাড়ির পাশের আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক নাইম, সেও তার সম্পর্কে ফুফু, তাকে বিয়ে করেছে। আর মানুষ তোমার আমার সম্পর্ক নিয়ে কেন অন্যকিছু ভাববে না? একটা ছড়াও বললাম* ওগো প্রিয়তমা, লোকসমক্ষে ডেকো মামা*এবং নির্লজ্জভাবে যেটা বললাম সেটা হলো, আইলাভইউ। এবং চুমুও খেলাম ফোনে। তারপর একদিন এইতো গত১৪ ফেব্রুয়ারিতে সারাদিন একত্রে কাটালাম, দুজন দুজনকে অনেক চুমু খেলাম। ও ও এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, যেন আমাকে চুমু খাওয়ার জন্যই ওর জন্ম।এদিকে একটা ফার্মে আমি জয়েন করি। কদিন হলো! অথচ মনে হয় যেন যুগযুগ ধরে আমি চাকরিই করছি। আর এই চাকরিতে ঢোকার পরই আমার সবকিছু পাল্টে যেতে লাগল। দুনিয়াকে দেখছি সম্পূর্ণ আলাদাভাবে। ওর কোনও কিছুই আর আমাকে কৌতূহলি করে না, আকৃষ্টও করে না। আমি ওকে এখন এড়াতে চাই। কিন্তু ও চায় আমাকে গিলে খেতে। ফোনে কোটিকোটি চুমু... আরও অনেক অ্যাডাল্টনেস। আমি বোরিং ফিল করি। মা আমার জন্য ছেলে ঠিক করেছে। আর ওকেতো অন্যভাবে নেওয়া নাকি সম্ভব নয়। কারণ আশপাশের মানুষ তাতে প্রশ্ন তুলবে।...তাহলে এখন উপায়?আমার ধারণা ও এখন আমাকে একান্তভাবেই চায়। এবং সেটা...কিন্তু আমিকি নিজেকে নিঃশেষ করে দেবো? সবাইকে ছেড়ে একা থাকতেকি পারবো? পারবো না।এ কেমন সম্পর্ক হয় মানুষের?ছিঃছিঃমাঝেমাঝে ইচ্ছেকরে বিষ খেতে। আবার ভাবি দেখি না আরেকটু। যদি বেঁচে থাকা যায়।জানি না, কোন ইচ্ছাটার বিজয় হয়...শুধু জানি আমি অন্যায় করেছি, অন্যায় করছি, পাপ আমাকে ছাড়বে না। অতএব...
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন